Wednesday, 20 January 2016

আন‌-নাবেগাহ‌ আজ-জুবিয়ানি

আন্‌-নাবেগ়াহ্‌ আজ়্-জ়ুবিয়ানি

(৫৩৫ – ৬০৪ খ্রিঃ)

আব্দুল মাতিন ওয়াসিম

 

জন্ম ও পরিচয়ঃ

তিনি প্রথম স্তরের একজন জাহেলি কবি। জুবিয়ান গোত্রের একজন। তিনি উকাযে অনুষ্ঠিত বাৎসরিক কাব্য-প্রতিযোগিতার বিচারকও ছিলেন। পূর্ণ নাম আবু উমামাহ যিয়াদ বিন মুয়াবিয়া বিন দ়ুবাব আজ্‌-জুবিয়ানী আল-গাত্‌ফানী। কবিত্বে তাঁর নৈপুণ্যের জন্য তাঁকে নাবেগাহ (সুনিপুন) উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ২৩০ হিজরী পূর্বাব্দে তিনি জন্ম লাভ করেন। অনেকে তাঁকে মু’আল্লাকা কবি গোষ্ঠীর মধ্যে গণ্য করেছে।

 

প্রাথমিক জীবনঃ

তাঁর প্রাথমিক জীবন সম্পর্কে এ ব্যতীত আর কিছুই জানা যায়নি যে, তিনি তাঁর গোত্রের কোনও উচ্চ ও সম্মানীয় নয় বরং এক সাধারন মধ্যবিত্ত্ব পরিবারে লালিত-পালিত। জাহেলী যুগে কবিদের প্রচুর সম্মান দেওয়া হতো, তাছাড়া তিনি তাঁর জাতি ও গাসাসেনাহদের মধ্যে মীমাংসা ও যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছিলেন, তাই তাঁকে গোত্রের একজন সর্দার নিযুক্ত করা হয়।

 

রাজদরবারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কঃ

হেরার রাজদরবার ও রাজপরিবারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তৃতীয় মুনযিরের রাজত্বকালের শেষ দিকে। মানাযেরাদের সঙ্গে তাঁর এই সম্পর্ক দিনের পর দিন আরও গভীরতর হয়েছিল, এমন কি উমার বিন হিন্দ পিতার মৃত্যুর পর সিংহাসনে আরোহণ করে কবিকে অভিনন্দনও জানিয়ে ছিলেন। পরবর্তীতে তাঁদের সঙ্গে কবির সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়, বিশেষত ৫৭০-৫৮০ পর্যন্ত। কারণ এই সময়ে কবি ‘সিবাক’ যুদ্ধের ঘটনাবলীর প্রতি গুরুত্বারোপ করে একজন রাজনৈতিক কবির ভুমিকা পালন করছিলেন।

 

মৃত্যুঃ

অতঃপর তিনি বানু গাস্‌সানদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। তারা তাঁকে রত্ন খচিত কাব্য-বানীর জন্য দিনার-দিরহাম প্রদান করতনু’মানের অসুস্থতার খবর শুনে তাঁর নিকট ফিরে আসেন এবং ক্ষ্মা প্রার্থনা করে তাঁর সম্মুখে এক অনুপম কবিতা আবৃতি করেন। নু’মান খুশি হয়ে তাঁকে পূর্বের স্থান ও সম্মান প্রদান করেন। তাঁর নিকটেই তিনি ১৮ হিজরী পূর্বাব্দে মৃত্যু বরণ করেন।

 

কবিত্বঃ

তিনি জাহেলী যুগের কবি ত্রয়ীর একজন যাদের কবিতার শ্রেষ্ঠত্ব সর্বজন বিদিত ও স্বীকৃত। তাঁরা হলেন ইমরাউল কায়েস, যুহায়ের ও নাবেগাহ। তিনি ভয়ঙ্কর রাত্রির বর্ণনা, অপরাধীর ক্ষমাপ্রার্থনা ও পরোপকারীর প্রশংসা জ্ঞাপণে অদ্বিতীয় ছিলেন।

 

তাঁর কবিতার বৈশিষ্টঃ 

অনুপম কেনায়াহ, সুক্ষ্ম ইঙ্গিত প্রদান, স্বচ্ছ ও সাবলীল বর্ণনা, অকৃত্রিম ও মানুষের আবেগ-চাহিদা অনুযায়ী কবিতা রচনায় তিনি ইমরাউল কায়েস ও যুহায়ের অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ছিলেন। এই কারণেই জাহেলী ও ইসলামের প্রথম যুগে জনগণ তাঁর কবিতা যতটা গুণগুণ করত আর কারও করত না। উমার বিন হারিসের প্রশংসায় তিনি একদা বলেছিলেন—

ولا عيب فيهم غير أن سيوفهم     بهنّ فلول من قراع الكتائب

No comments:

Post a Comment